Discuss about the role of Educational Psychology in Education (শিক্ষাক্ষেত্রে শিক্ষা-মনোবিজ্ঞানের ভূমিকা আলোচনা করুন ?)

Q. শিক্ষাক্ষেত্রে শিক্ষা-মনোবিজ্ঞানের ভূমিকা আলোচনা করুন ?
শিক্ষা মনোবিজ্ঞান হল শিক্ষার্থীর শিক্ষাকালীন  আচরণের বিজ্ঞান । অর্থাৎ শিক্ষা প্রক্রিয়াকে কার্যকরী করে গড়ে তুলতে শিক্ষার মনোবিজ্ঞানের ভূমিকা অপরিহার্য । কেননা সঠিকভাবে শ্রেণী পরিচালনার ক্ষেত্রে মনোবিজ্ঞান সম্মত বিষয়বস্তু প্রয়োগে শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীর আচরণ সংশোধন করা সম্ভব। সফল চিকিৎসক হতে গেলে যেমন পেশাগত জ্ঞান ও দক্ষতা জানা প্রয়োজন। তেমনি একজন সফল শিক্ষক হতে গেলে শিক্ষার্থীর সামনে উপস্থাপন করা বিষয়ের গভীর জ্ঞান থাকা প্রয়োজন । শিক্ষা ক্ষেত্রে শিক্ষা-মনোবিজ্ঞানের ব্যবহার দুটি দিকের ওপর গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ  অবলম্বন  করে আছে। তা  হলো –

A.  তাত্ত্বিক দিক ।
B. ব্যবহারিক দিক ।

A.  তাত্ত্বিক দিক :- 
                 তাত্ত্বিক দিক বলতে বোঝায়  শুধুমাত্র বিদ্যালয়ের বিষয়বস্তুগত দিকটাকে উল্লেখ করা হয় ।
১. ব্যক্তিগত পার্থক্য:- 
                      যেখানে শিক্ষার্থীর মধ্যে ব্যক্তিগত পার্থক্য বর্তমান থাকবে এবং বিদ্যালয়ে শিক্ষামূল্য বিদ্যার মাধ্যমে শিক্ষা ক্ষেত্রে ব্যক্তিগত পার্থক্য বজায় রাখা শিক্ষা মনোবিদ্যার একটা গুরুত্বপূর্ণ কাজ।
২. কার্যকরী শিখন পদ্ধতি :-
              কার্যকরী শিখন পদ্ধতিতে উপযুক্ত শিখন পদ্ধতি নির্বাচন করার ক্ষেত্রে শিক্ষা মনোবিজ্ঞানের যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা অবলম্বন করতে হয়। কারণ শিক্ষার্থীকে পুরনো বিষয়ে ত্যাগ করে নতুন বিষয় শিখতে এই শিক্ষা মনোবিজ্ঞানের  খুবই উপযোগী এক পদ্ধতি।
৩. মানসিক স্বাস্থ্য :-
                  মানসিক স্বাস্থ্য সম্পর্কে জ্ঞান শিক্ষক – শিখন প্রক্রিয়ায়, শিক্ষক শিক্ষার্থীর মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর গুরুত্ব দিয়ে শ্রেণীকক্ষে বিভিন্ন বিষয় উপস্থাপন করবেন। যেখানে শিক্ষার্থীদের কাছে সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনা করার দক্ষতা অর্জন করা যায়। যাতে  স্বাস্থ্যের ক্ষতি না হয়। শিক্ষার্থীর স্বাস্থ্য কে ঠিক রেখে শিক্ষা মনোবিজ্ঞানের  মধ্য দিয়ে বিভিন্ন বিষয়বস্তু উপস্থাপন করা হয়।
৪. শিক্ষার্থীর বিকাশ সম্পর্কিত তথ্য:- 
                         শিক্ষার্থীর বিকাশ সম্পর্কিত তথ্য শিক্ষার্থীর সুস্থ  সর্বাঙ্গিক বিকাশ সাধনে শিক্ষা মনোবিজ্ঞানের গুরুত্ব  অপরিসীম। কারণ জীবন বিকাশের বিভিন্ন স্তর গুলি শিক্ষা মনোবিজ্ঞানের মধ্য দিয়ে পরিবাহিত হয়ে থাকে ।
৫. পাঠক্রম গঠন :-
           পাঠক্রম গঠনের ক্ষেত্রে শিক্ষা মনোবিজ্ঞানের গুরুত্বপূর্ণ দিক উল্লেখ করা যায় ।তার কারণ বিভিন্ন বয়সের শ্রেণীকক্ষে পাঠক্রম প্রস্তুতের ক্ষেত্রে শিক্ষা-মনোবিজ্ঞানের জ্ঞান থাকা প্রয়োজন ।তাই       শ্রেণিকক্ষে পাঠ্যক্রম প্রস্তুতে শিক্ষামূলক বিজ্ঞানের  দিক থেকে শিক্ষার্থীর চাহিদা এবং আগ্রহের উপর ভিত্তি করে পাঠ্যক্রম তৈরি হয় ।
৬. ব্যতিক্রমী শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ শিক্ষা ব্যবস্থা:-
        ব্যতিক্রমী শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ শিক্ষা ব্যবস্থা করা শিক্ষা মনোবিজ্ঞানের মধ্য দিয়ে শিক্ষার্থীকে নির্দিষ্টকরণ করা এবং তাদের প্রতিবন্ধী কথার মাত্রা কে চিহ্নিতকরণ করা এবং                                      সবশেষে সমসামূলক সমাধানে তাদের সহযোগিতা করা । এক্ষেএে শিক্ষা-মনোবিজ্ঞান বিশেষ ভূমিকা অবলম্বন করে থাকে।
৭.  দলীয় গতিশীলতা:- 
        শিক্ষা মনোবিদগণ শ্রেণীকক্ষে শিখন প্রক্রিয়াকে সঠিকভাবে উপস্থাপন করতে গেলে তারা মনে করেন যে শ্রেণীতে দলীয় গতিশীলতা নির্ভর করে অনেকটাই শিক্ষা মনোবিজ্ঞানের উপর ভিত্তি করে এবং এই শিক্ষা মনোবিজ্ঞান সঠিকভাবে জ্ঞান সরবরাহ করে থাকে।

মনোবিজ্ঞানের ভূমিকা, অর্থ এবং সংজ্ঞা,  শিক্ষাগত মনোবিজ্ঞানের প্রকৃতি এবং পরিধি এই বিষয়টি জানতে হলে —- এই লিঙ্কে ক্লিক কারুন। 

B. ব্যবহারিক দিক :-
                                    ব্যবহারিক দিকে শ্রেণীকক্ষে শিক্ষার্থীর দৈনন্দিন জীবনে যাবতীয় কার্যকলাপটা উল্লেখ করা হয় ।ব্যবহারিক দিকের প্রয়োগ শিখা ক্ষেত্রে শিক্ষা মনোবিজ্ঞানগত বিষয়বস্তুকে কিভাবে ব্যবহারিক দিকে প্রয়োগ করা যায় তা নিম্নরূপে বর্ণিত করা হল—
১. গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা :-
                      প্রথাগত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে যদি শিক্ষা দেওয়া যায় তবে মনোবিজ্ঞান সম্মতভাবে প্রত্যেক শিক্ষার্থী সঠিকভাবে শিক্ষা গ্রহণ করতে পারবে। 
২. শিক্ষার প্রতিপনের ব্যবহার:-
                          শিক্ষা প্রতিপনকে সঠিকভাবে ব্যবহার করতে গেলে শিক্ষা মনোবিজ্ঞানের পদ্ধতিগত দিক থেকে সহযোগিতা পেতে হয়  । যার মধ্য দিয়ে শ্রেণীকক্ষে প্রত্যেকটি বিষয়বস্তুকে সঠিকভাবে উপস্থাপন করার ক্ষেত্রে সঠিকভাবে প্রতিপন ব্যবহার করা প্রয়োজন।
৩. শ্রেণিকক্ষে সময় তালিকা:-
              শ্রেণিকক্ষে সময় তালিকা অনুযায়ী প্রত্যেকটি বিষয়বস্তু সময় অনুসারে শ্রেণীতে উপস্থাপন করার ক্ষেত্রেও শিক্ষা মনোবিজ্ঞানের গুরুত্বপূর্ণ পদ্ধতি বা গুরুত্বপূর্ণ দিক উল্লেখ করা যায়। তার                   কারণ নির্দিষ্ট সময় অনুসারে ক্লাস কে ভাগ করা ,যাতে শিক্ষার্থীর মানসিক ক্লান্তি দূর করা যায় এবং সেই অনুসারে শ্রেণী পরিচালনা করার সময় তালিকা প্রস্তুতের ক্ষেত্রে শিক্ষা মনোবিজ্ঞানের               সাহায্য নিতে হয় ।
৪. শিক্ষার্থীর সুসংহত ব্যক্তিত্বের বিকাশ সাধন করা :-
            শিক্ষার অন্যতম লক্ষ্য হলো শিক্ষার্থীর সুসংহত ব্যক্তিত্বের বিকাশ সাধন করা। সেই কারণেই শিক্ষা মনোবিজ্ঞানের সাহায্যে প্রত্যেকটি শিক্ষার্থী বিভিন্ন কার্যাবলীর                                                     অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে তাদের সার্বাঙ্গিক বিকাশ সম্ভব। তাই বিভিন্ন খেলাধুলা ,নাটক ,ভ্রমণ, অনুষ্ঠান ,প্রভৃতি সক্রিয় অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে তারা সর্বাঙ্গিক বিকাশ সাধন করতে                                     পারবে  তা শিক্ষা মনোবিজ্ঞানসম্মত ফলেই সম্ভব হয়।
৫. শৃঙ্খলা রক্ষা :-
            শ্রেণিকক্ষে দৈনন্দিন জীবনের শৃঙ্খলা সমস্যা সমাধানে শিক্ষা মনোবিজ্ঞানের গুরুত্ব অপরিসীম। তার কারণ প্রতিটি শিক্ষার্থীকে সঠিকভাবে শিক্ষা দেওয়া এবং সঠিক শৃঙ্খলা রক্ষার ক্ষেত্রে                       শিক্ষামূলবিদগণ শিক্ষা মনোবিজ্ঞানের উপর গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহণ করে থাকেন। কারণ শ্রেণিকক্ষে বিশৃঙ্খলা আচরণ সংশোধন কিভাবে করা যাবে তা শিক্ষা মনোবিজ্ঞানের মধ্য থেকেই খুঁজে  নিতে হয়।
                                        পরিশেষে বলা যায় শিক্ষা মনোবিদ্যা ছাড়া শিক্ষা পরিচালনা সুষ্ঠুভাবে সম্ভব নয় । তার কারণ শ্রেণি পরিচালনার ক্ষেত্রে শিক্ষককে অবশ্যই শিক্ষা মনোবিদ্যার উপর উপর নির্ভর করতে হয়। বর্তমান শিশু কেন্দ্রিক শিক্ষা ব্যবস্থায় নিত্য নতুন গবেষণার ফলে নতুন নতুন তথ্য ও তথ্য উদ্ভাবন হচ্ছে যার ফলে সরুপ  শিক্ষা প্রক্রিয়াকে আরো সহজ প্রাণ – উজ্বল করে উপস্থাপন করা হয়। বর্তমানে National Curriculum Framework 2005 অনুসারে যে কারিকুলাম তৈরি হয়েছে, সেই অনুযায়ী প্রথম শ্রেণী থেকে অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের মনোবিজ্ঞানসম্মত জ্ঞান  রপ্ত করতে পারবে এবং যেখানে শিক্ষক মহাশয়ও সঠিকভাবে মনোবিজ্ঞান সম্মত পাঠ প্রদান করতে পারবেন। যেখানে শিক্ষার্থীরা নিজেরাই Constructivism দৃষ্টিভঙ্গির উপর ভিত্তি করে শিক্ষা অর্জন করার পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের ভয় হীন পরিবেশ তৈরি করে শিক্ষক মহাশয় মনোবিজ্ঞান সম্মত পাঠ প্রদান করবেন। সুতরাং সব শেষে বলা যায় বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থায় শিক্ষা  শিক্ষকের মনোবিজ্ঞান সম্মত জ্ঞান থাকা আবশ্যক যার ফলস্বরূপ শিক্ষা ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীর জন্য শ্রেণিকক্ষ উন্নত পাঠ্যপুস্তু রচনার ক্ষেত্রে শিক্ষক মহাশয় বিভিন্ন পদ্ধতি অবলম্বনের করে থাকেন। ।
Share
error: Content is protected !!