1,007 Views
Q. গ্রামীন বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে রাধাকৃষ্ণন কমিশনের সুপারিশ গুলি আলোচনা করো ?
অথবা,
Q. গ্রামীণ বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে রাধাকৃষ্ণন কমিশন কি বলেছেন ?
রাধাকৃষ্ণন কমিশন আত্মপ্রকাশ করেন যে এদেশের চলতি বিশ্ববিদ্যালয়গুলি জাতীয় জীবন উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করে । গ্রামাঞ্চলের শিক্ষার্থীরা গ্রামে বাস করে এবং শহরে এসে পড়ার সুযোগ হয় না । তাদের উচ্চ শিক্ষার জন্য কমিশন গ্রামীন বিশ্ববিদ্যালয় নামে নতুন শ্রেণীর বিশ্ববিদ্যালয় পরিকল্পনা গ্রহণ করেছিলেন। গ্রামীন বিশ্ববিদ্যালয় গ্রামীণ শিক্ষার উচ্চতম শিক্ষার অংশ ।তাই এই কমিশনের সুপারিশগুলি হল–
১. ভারতের গ্রামগুলিকে পুনর্গঠন করতে হবে।
২. গ্রামীণ কলেজে 300 জন ও বিশ্ববিদ্যালয় গুলিতে শিক্ষার্থীর সংখ্যা হবে ২৫০ বেশি হবে না।
৩. গ্রামীন কলেজ ও ইউনিভারসিটির জন্য আলাদা শিক্ষক ও শিক্ষাদানের ব্যবস্থা করতে হবে।
৪. গ্রামীণ বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে গবেষণার ব্যবস্থা করতে হবে।
A. গ্রামীণ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও শিক্ষা পরিকল্পনা নিম্নরূপ:-
(i) প্রাথমিক স্তর – ৪ বছরের জন্য।
(ii) মাধ্যমিক স্তর – ৩ থেকে ৪ বছরের জন্য ।
(iii) কলেজ স্তর – ৩ বছরের জন্য।
(iv) বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা স্তর -২ বছরের জন্য।
B. পাঠ্যক্রম :-
কমিশনার মধ্যে গ্রামীণ বিশ্ববিদ্যালয় দুই ধরনের পাঠক্রম থাকবে –
১. জেনারেল এডুকেশন ।
২. প্রফেশনাল এডুকেশন ।
C. শিক্ষক:-
যে কোনো শিক্ষা পরিকল্পনার সাফল্য নির্ভর করে শিক্ষকদের উন্নত চরিত্র, শিক্ষাগত গুন ,ও শিক্ষকের শিক্ষাদানের যোগ্যতার উপর । কমিশন যোগ্যতার অনুসারে শিক্ষকদের চারটি ভাগে ভাগ করেছেন-
এক. প্রফেসর ।
দুই. লেকচারার ।
তিন. রিডার ।
চার. ইন্সট্রাক্টর ।
এছাড়া সবাইকে সাহায্য করার জন্য থাকবেন গবেষক।
D. শিক্ষার মাধ্যম:-
কমিশন মাধ্যমিক থেকে বিশ্ববিদ্যালয় স্তর পর্যন্ত ত্রিভাষার সূত্র সুপারিশ করেছেন-
এক > আঞ্চলিক ভাষা বা মাতৃভাষা ।
দুই > সার্বভারতীয় ভাষা বা হিন্দি ভাষা ।
তিন > ইংরেজি ভাষা বা আন্তর্জাতিক ভাষা ।
E. মূল্যায়ন ব্যবস্থা :-
কমিশনের মধ্যে আমাদের দেশের যে পরীক্ষা ব্যবস্থা বা মূল্যায়ন পদ্ধতি আছে তা অত্যন্ত ত্রুটিপূর্ণ । পরীক্ষায় রচনাধর্মী না হয়ে যতটা সম্ভব অবজেক্টিভ টাইপ এর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। শিক্ষার্থীদের মান প্রদানের মাত্রাটিও গ্রেডিং সিস্টেমের মধ্যে রাখতে হবে।
পরিশেষে বলা যায় রাধাকৃষ্ণান কমিশন গ্রামীণ বিশ্ববিদ্যালয়ের এই চিন্তাভাবনা স্বাধীন ভারতের শিক্ষা চিন্তা সংক্রান্ত প্রথম সরকারি দলিল। শুধু তাই নয় নারী শিক্ষা , ছাত্র মঙ্গল ও শরীরচর্চা এবং ছাত্রদের জন্য হাসপাতালে চিকিৎসার আয়োজন করার কথা বলেছেন। কমিশন সুপারিশগুলি এতটাই সর্বজনীন যে সেগুলি ভারতীয় শিক্ষা বিকাশের ক্ষেত্রে যে কোন সময়ে তাৎপর্যপূর্ণ।।